মহান আল্লাহ তা‘আলা তার পাক কালামে শবে কদরের ফযীলত সম্পর্কে বলেছেন,
﴿ إِنَّا أَنْزَلْنَاهُ فِي لَيْلَةِ الْقَدْرِ ١ وَمَا أَدْرَاكَ مَا لَيْلَةُ الْقَدْرِ ٢ لَيْلَةُ الْقَدْرِ خَيْرٌ مِنْ أَلْفِ شَهْرٍ ٣ تَنَزَّلُ الْمَلَائِكَةُ وَالرُّوحُ فِيهَا بِإِذْنِ رَبِّهِمْ مِنْ كُلِّ أَمْرٍ ٤ سَلَامٌ هِيَ حَتَّىٰ مَطْلَعِ الْفَجْرِ ٥ ﴾ [القدر: ١، ٥]
অর্থাৎ নিশ্চয়ই আমি এ (কুরআন)কে অবতীর্ণ করেছি মর্যাদাপূর্ণ রাত্রিতে শবেকদর আর মর্যাদাপূর্ণ রাত্রি সম্বন্ধে তুমি কি জান? মর্যাদাপূর্ণ রাত্রি সহস্র মাস অপেক্ষা উত্তম। ঐ রাত্রিতে ফেরেশতাগণ ও রূহ (জিবরীল) অবতীর্ণ হয় প্রত্যেক কাজে তাদের প্রতিপালকের অনুমতিক্রমে। শান্তিময় সেই রাত্রি ফজর উদয় হওয়া পর্যন্ত। (সূরা ক্বাদর)
তিনি আরও বলেছেন,
﴿ حمٓ ١ وَالْكِتَابِ الْمُبِينِ ٢ إِنَّا أَنْزَلْنَاهُ فِي لَيْلَةٍ مُبَارَكَةٍ ۚ إِنَّا كُنَّا مُنْذِرِينَ ٣فِيهَا يُفْرَقُ كُلُّ أَمْرٍ حَكِيمٍ ٤ أَمْرًا مِنْ عِنْدِنَا ۚ إِنَّا كُنَّا مُرْسِلِينَ ٥ رَحْمَةً مِنْ رَبِّكَ ۚ إِنَّهُ هُوَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ ٦ ﴾ (الدخان: ١، ٦)
অর্থাৎ, নিশ্চয় আমি এ (কুরআন) অবতীর্ণ করেছি এক বরকতময় (আশিস-পূত শবে কদর) রাতে; নিশ্চয় আমি সতর্ককারী। এ রাতে প্রত্যেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় স্থিরীকৃত হয়। আমার আদেশক্রমে, আমি তো রাসূল প্রেরণ করে থাকি। এ তোমার প্রতিপালকের নিকট হতে করুণা; নিশ্চয় তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ। (সূরা দুখান ৩ আয়াত)
রিয়াযুস স্বা-লিহীন অধ্যায়ঃ ৯, হাদিস নাম্বার:১১৯৭ হাদিসের মানঃ সহিহ
وَعَنْ أَبِي هُرَيرَةَ رضي الله عنه، عَنِ النبيِّ صلى الله عليه وسلم، قَالَ: «مَنْ قَامَ لَيْلَةَ القَدْرِ إِيمَاناً وَاحْتِسَاباً غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ». متفقٌ عَلَيْهِ
আবূ হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “যে ব্যক্তি শবেকদরে (ভাগ্য-রজনী অথবা মহীয়সী রজনীতে) ঈমানসহ সাওয়াবের আশায় কিয়াম করে (নামায পড়ে), তার অতীতের গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়।” (বুখারী ও মুসলিম)।
সহীহ বুখারী (ইফাঃ) অধ্যায়ঃ ৫১, হাদিস নাম্বার:৪১১৮ , হাদিসের মানঃ সহিহ
حَدَّثَنَا أَصْبَغُ، قَالَ أَخْبَرَنِي ابْنُ وَهْبٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي عَمْرٌو، عَنِ ابْنِ أَبِي حَبِيبٍ، عَنْ أَبِي الْخَيْرِ، عَنِ الصُّنَابِحِيِّ، أَنَّهُ قَالَ لَهُ مَتَى هَاجَرْتَ قَالَ خَرَجْنَا مِنَ الْيَمَنِ مُهَاجِرِينَ، فَقَدِمْنَا الْجُحْفَةَ، فَأَقْبَلَ رَاكِبٌ فَقُلْتُ لَهُ الْخَبَرَ فَقَالَ دَفَنَّا النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم مُنْذُ خَمْسٍ. قُلْتُ هَلْ سَمِعْتَ فِي لَيْلَةِ الْقَدْرِ شَيْئًا قَالَ نَعَمْ أَخْبَرَنِي بِلاَلٌ مُؤَذِّنُ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ فِي السَّبْعِ فِي الْعَشْرِ الأَوَاخِرِ.
আসবাগ (রহঃ) সুনাবিহী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, তাঁকে কেউ জিজ্ঞাসা করেন আপনি কখন হিজরত করেছেন? তিনি বলেন, আমরা ইয়ামান থেকে হিজরতের উদ্দেশ্যে বের হয়ে জুহফাতে পৌঁছি। তখন একজন অশ্বারোহীকে পেয়ে জিজ্ঞাসা করলাম, খবর কি খবর কি? তিনি বললেন, পাঁচদিন অতিবাহিত হল আমারা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে সমাহিত করেছি। তখন আমি তাঁকে জিজ্ঞাসা করলাম, তুমি কি শবেকদর সম্পর্কে কিছু শুনেছ? তিনি বললেন, হ্যাঁ, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মুয়াযযিন বিলাল (রাঃ) আমাকে জানিয়েছেন যে, তা রমযানের শেষ দশ দিনের সপ্তম দিনে রয়েছে।
সূনান আবু দাউদ (ইফাঃ) অধ্যায়ঃ ২, হাদিস নাম্বার:১৩৮৬, হাদিসের মানঃ সহিহ
حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ مُعَاذٍ، حَدَّثَنَا أَبِي، أَخْبَرَنَا شُعْبَةُ، عَنْ قَتَادَةَ، أَنَّهُ سَمِعَ مُطَرِّفًا، عَنْ مُعَاوِيَةَ بْنِ أَبِي سُفْيَانَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِي لَيْلَةِ الْقَدْرِ قَالَ " لَيْلَةُ الْقَدْرِ لَيْلَةُ سَبْعٍ وَعِشْرِينَ " .
উবায়দুল্লাহ ইবন মুআয (রহঃ) মুআবিয়া ইবন আবু সুফিয়ান (রাঃ) নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম হতে শবে কদর সম্পর্কে বর্ণনা করেছেন। তিনি (সাঃ) বলেনঃ রমযানের সাতাইশ তারিখ হল লাইলাতুল কদর।
সহীহ বুখারী (ইফাঃ), অধ্যায়ঃ ২৪, হাদিস নাম্বার:১৮৯০, হাদিসের মানঃ সহিহ
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا أَبُو سُهَيْلٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ ـ رضى الله عنها ـ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " تَحَرَّوْا لَيْلَةَ الْقَدْرِ فِي الْوِتْرِ مِنَ الْعَشْرِ الأَوَاخِرِ مِنْ رَمَضَانَ ".
কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা রমযানের শেষ দশকের বেজোড় রাতে লাইলাতুল কদরের সন্ধান কর।
সহীহ বুখারী (ইফাঃ), অধ্যায়ঃ ২৪, হাদিস নাম্বার:১৮৯৬, হাদিসের মানঃ সহিহ
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا خَالِدُ بْنُ الْحَارِثِ، حَدَّثَنَا حُمَيْدٌ، حَدَّثَنَا أَنَسٌ، عَنْ عُبَادَةَ بْنِ الصَّامِتِ، قَالَ خَرَجَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم لِيُخْبِرَنَا بِلَيْلَةِ الْقَدْرِ، فَتَلاَحَى رَجُلاَنِ مِنَ الْمُسْلِمِينَ، فَقَالَ " خَرَجْتُ لأُخْبِرَكُمْ بِلَيْلَةِ الْقَدْرِ، فَتَلاَحَى فُلاَنٌ وَفُلاَنٌ، فَرُفِعَتْ، وَعَسَى أَنْ يَكُونَ خَيْرًا لَكُمْ، فَالْتَمِسُوهَا فِي التَّاسِعَةِ وَالسَّابِعَةِ وَالْخَامِسَةِ ".
মুহাম্মদ ইবনুল মূসান্না (রহঃ) ... ‘উবাদা ইবনুুস সামিত (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একবার নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে লাইলাতুল কদরের (নির্দিষ্ট তারিখের) অবহিত করার জন্য বের হয়েছিলেন। তখন দু'জন মুসলমান ঝগড়া করছিল। তা দেখে তিনি বললেনঃ আমি তোমাদেরকে লাইলাতুল কদরের সংবাদ দিবার জন্য বের হয়েছিলাম, তখন অমুক অমুক ঝগড়া করছিল, ফলে তার (নির্দিষ্ট তারিখের) পরিচয় হারিয়ে যায়। সম্ভবতঃ এর মধ্যে তোমাদের জন্য কল্যান নিহিত রয়েছে। তোমরা নবম, সপ্তম ও পঞ্চম রাতে তা তালাশ কর।
0 comments:
Post a Comment