মাহমূদ ইবন গায়লান (রহঃ) ..মা’কিল ইবন ইয়াসার রাদিয়াল্লাহু আনহ থেকে বর্ণিত, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি সকালে তিনবার পাঠ করবেঃ
أَعُوذُ بِاللهِ السَّمِيعِ العَلِيمِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيمِ
এরপর সূরা হাশরের শেষ তিন আয়াত পাঠ করবে আল্লাহ্ তা’আলা তার জন্য সত্তর হাজার ফিরিশতা নিযুক্ত করে দেন। যাঁরা বিকাল পর্যন্ত তার জন্য রহমতের দু’আ করতে থাকেন।
এই দিন যদি সে মারা যায় তবে তার শহীদী মৃত্যু হয়।
আর যদি বিকালে পাঠ করে তবুও ঐ ফযীলতই হবে।
তা'লীকুর রাগীব ২/২৫৫ হাদিসের মানঃ- যঈফ
সুরা হাশরের শেষ তিন আয়াত ও উচ্চারণঃ-
هُوَ اللَّهُ الَّذِي لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ عَالِمُ الْغَيْبِ وَالشَّهَادَةِ هُوَ الرَّحْمَنُ الرَّحِيمُ
উচ্চারণঃ- হু আল্লা হুল্লাজী লা(আ) ইলাহা ইল্লা হু। আলিমুল গাইবী ওয়াশ শাহাদাতী হুয়ার রাহমানুর রাহীম।
অর্থঃ- তিনিই আল্লাহ তা’আলা, তিনি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই; তিনি দৃশ্য ও অদৃশ্যকে জানেন তিনি পরম দয়ালু, অসীম দাতা। [সুরা হাশর: ২২]
هُوَ اللَّهُ الَّذِي لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ الْمَلِكُ الْقُدُّوسُ السَّلَامُ الْمُؤْمِنُ الْمُهَيْمِنُ الْعَزِيزُ الْجَبَّارُ الْمُتَكَبِّرُ سُبْحَانَ اللَّهِ عَمَّا يُشْرِكُونَ
উচ্চারণঃ- হু আল্লা হুল্লাজী লা(আ) ইলাহা ইল্লা হু। আল মালিকুল কুদ্দুসুস সালামুল ম্যু মিনুল মুহাইমিনুল আজিজুল জাব্বারুল মুতাকাব্বির। ছুব হানাল্লাহী আম্মা ইউশরিকুন।
অর্থঃ- তিনিই আল্লাহ তিনি ব্যতিত কোন উপাস্য নেই। তিনিই একমাত্র মালিক, পবিত্র, শান্তি ও নিরাপত্তাদাতা, আশ্রয়দাতা, পরাক্রান্ত, প্রতাপান্বিত, মাহাত্ন?শীল । তারা যাকে অংশীদার করে আল্লাহ তা’ আলা তা থেকে পবিত্র। [সুরা হাশর: ২৩]
هُوَ اللَّهُ الْخَالِقُ الْبَارِئُ الْمُصَوِّرُ لَهُ الْأَسْمَاء الْحُسْنَى يُسَبِّحُ لَهُ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَهُوَ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ
উচ্চারণঃ- হু আল্লাহুল খালেকুল বারিয়্যুল মুছাওরেলাহুল আছমা(আ)উল হুছনা। ইউ ছাব্বিহু লাহু মা ফিছ ছামা ওয়াতি ওয়াল আরদ্ ওয়া হুয়াল আজীজুল হাকীম।
অর্থঃ- তিনিই আল্লাহ তা’আলা, স্রষ্টা, উদ্ভাবক, রূপদাতা, উত্তম নাম সমূহ তাঁরই। নভোমন্ডলে ও ভূমন্ডলে যা কিছু আছে, সবই তাঁর পবিত্রতা ঘোষণা করে। তিনি পরাক্রান্ত প্রজ্ঞাময়। [সুরা হাশর: ২৪]
সুরা হাশর ফজর নামাজের পর সমষ্টিগতভাবে সজোরে পড়া বেদাত ও মাকরুহ্ কাজ । উল্লেখ্য যে, সুরা হাশরের সর্বশেষ আয়াত সমূহের উপকারিতা ও কল্যাণ প্রসঙ্গে তিরমিজি শরিফে বর্ণিত আছে যে, নবী কারিম (সাঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি সকালে সুরা হাশরের শেষ ৩ আয়াত পাঠ করবে আল্লাহ তায়ালা তার জন্য সত্তর হাজার ফেরেস্তা নিযুক্ত করে দিবেন । তারা সন্ধা পর্যন্ত তার জন্য রহমতের দোয়া করবে । সেদিন মারা গেলে শহীদের মৃত্যু হাসীল হবে । যে ব্যক্তি সন্ধ্যায় এ দোয়া পাঠ করবে সেও এই মর্তবা লাভ করবে ।
উক্ত হাদীসে সূরা হাশরের শেষ ৩ আয়াত সকালে অর্থাৎ ভোরে ঘুম হতে উঠার পর পবিত্র অবস্থায় এবং সন্ধায় একাকি পাঠ করার কথা উল্লেখ রয়েছে । কিন্তু ফজরের নামাজের জামায়াতের পর সরবে সমষ্টিগতভাবে পড়ার বা পাঠ করার কথা আদৌ উল্লেখ নেই । বিধায় ফজরের নামাযের পর সমষ্টিগতভাবে সরবে পড়তেই হবে এটাও বেদাতী আকিদা-বিশ্বাস । কারণ হযরত মুজাদ্দিদ আলফেসানী (রহঃ) বলেছেন,
প্রত্যেক আমলের স্থান ও সময় আছে । সময় এবং স্থান মত না করলে তা ত্রুটি হয়। যদিও তা নেক ও ফজিলত পূর্ণ আমল হয় । যেমন নামাজে তাশাহুদ পাঠের সময় যদি কেউ সুরা ফাতেহা পাঠ করে তবে তা ভুল ও গুনাহ্ হবে । যদিও সেই সুরাটি কুরআনের জননী তূল্য হয় ।
— মকতুবাত শরীফ ৫ম খন্ড, ৮১ পৃঃ
উল্লেখ্য যে, ‘আদ্দীন’ কিতাবে ৮০ পৃঃ উল্লেখ আছে যে, নবী কারীম (সাঃ)সুরা হাশরের শেষ ৩ আয়াত ভোরে ঘুম হতে উঠার পর ‘পবিত্রতার সহিত’ পড়ার কথা বলেছেন । ফজরের নামাজ বাদ সাহাবিগণকে সাথে নিয়ে পড়েছেন এ কথা কোন হাদীসে প্রমাণ পাওয়া যায় না । সে কারণে ফজর নামাজ বাদ সকলে একসঙ্গে মিলে সজোরে পড়া বেদাত এবং মাকরুহ । মূল কথা নবী কারীম (সাঃ) যে কোন ব্যাপারে যে ভাবে যা আমল করার নির্দেশ দিয়েছেন সে ভাবে না পড়লে বা আমল না করলে তার ফায়দা পাওয়া যায় না বরং তার জন্য গুনাহ্ হয়। আর কোন কোন অবস্থায় আল্লাহর লানত পড়তে থাকে । এজন্য প্রত্যেক আমল ইসলামী শরীয়তের অর্থাৎ ফেকাহ্ বিধান অনুযায়ী করা দরকার, নচেৎ ফজিলত, ছওয়াব এবং বরকত কিছুই পাওয়া যাবে না ।
যখন মুসল্লিরা নামাজ, তসবিহ ইত্যাদিতে নিয়োজিত থাকেন তখন মসজিদে ফজরের নামাজের জামায়াতের পরে বা যে কোন ফরজ নামাজের জামায়াতের পরে সরবে সমষ্টিগতভাবে সুরা হাশরের শেষ ৩ আয়াত পাঠ করা মাকরুহ্ এবং বেদাত হবে । কারণ এর দ্বারা অন্যের এবাদতে বিঘগ্ন সৃষ্টি করা হয় । মুলতঃ সেও অন্যের এবাদতের বাধা প্রদানকারী হিসেবে গণ্য হবে এবং গুনাহ্গার হবে । যদিও বাহ্যতঃ ভালো কাজ কিন্তু শরীয়াতে ফেকার বিধান মতে না হলে মাকরুহ্ কাজ হবে । এজন্যে হযরত মুজাদ্দিদে আলফেসানি (রহঃ) বলেন,
তাই ধর্ম পথে চলার জন্য এবং আমল করার জন্য একজন মোর্শেদ বা পথ প্রদর্শক দরকার । নচেৎ আমল ও মেহনত বেকার ।
— মকতুবাত শরীফ ৫ম খন্ড ৮১ পৃঃ
0 comments:
Post a Comment